আপনি বছরে কয়’টা বই পড়েন? আমার অফিস+ক্লাসমেটদের এই প্রশ্নের উত্তরে যা জানলাম তা ভয়ানক। অফিসের লোকেরা বছরে একটা বইও পড়েন না, ২০ পৃষ্ঠাও পড়েন না অনেকেই। আর যারা ক্লাসমেট তারা পড়ার বই শুধু ধরেন, পড়েন না তেমন। এর বাইরে বিভিন্ন হিসেব বলছে, প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষ গড়-পড়তা ভাবে বছরে ৫টি বই পড়েন, যদি না তিনি সৌভাগ্যবান হন।
হার্ভার্ড বিজনেজ রিভিউতে দ্য হ্যাপিনেস ইকুয়েশন বইয়ের লেখক নেইল প্যাসরিশা বেই বই বেশি পড়ার উপায় সম্পর্কে লিখেছেন।
নেইল প্যাসরিশা যা লিখেছেন তা অনেকটা এমন,
প্রকাশ্যে প্রতিজ্ঞা করুন যে কোন কোন বই পড়বেন। রবার্ট সিয়ালদিনি দ্য সাইকোলজি অব পারসুয়েশন বইয়ে লিখেছেন, যখন মানুষ ঘোড়দৌড়ের মাঠে ঘোড়ার উপরে মানুষ বাজি ধরে, তখন দৌড়ানোর আগ পর্যন্ত বাজিকররা তার ঘোড়াই সেরা বলে সবাইকে জানাতে থাকে। এ সময়টায় সেই মানুষটা সবচেয়ে বেশি উজ্জীবিত থাকেন। আমরা কেন নিজেকে নেই মানুষটার মত ভাবতে পারি না? গুডরিডস বা এধরণের উন্মুক্ত ফোরামে বন্ধুবান্ধব নিয়ে উন্মুক্ত কোন বইলিস্ট তৈরি করতে পারেন, দল বেঁধে বই পড়ার আগ্রহ বেশি পড়তে উৎসাহিত করে।
বিল গেটসে রিডিং লিস্ট, ড্রেরেক শিভারর্সে লিস্ট কিংবা টিম ফেরিসের বই তালিকা ধরে বই পড়া শুরু করতে পারেন।
ফার্স্ট ফাইভ পেজ টেস্ট
যে কোন বই পুরো পড়ার আগে, ফার্স্ট ফাইভ পেজ টেস্ট করুন। কিংবা যে কোন বই কেনার আগেও ফার্স্ট ফাইভ পেজ টেস্ট করতে পারেন। ফার্স্ট ফাইভ পেজ টেস্টে বোঝা যায় কোন বই আপনাকে কেমন সাপোর্ট দিবে।
মলাটের বই পড়ুন
ই-বুক পড়া মানুষদের সংখ্যা কিন্তু বাড়ছে। তারপরেও মলাটের বইয়ে যে টান থাকে সেটা ইবুকে কিন্তু পাওয়া যায় না। স্মার্টফোন কিংবা কিন্ডল-নুকে বই পড়লে একটু ফেসবুক-একটু সোশাল মিডিয়াতে ঢু মারা সুযোগ থাকে, এতে পড়তে কিন্তু বেশিই টাইম লাগে। হাতে ধরা বই পড়ার সুখ আলাদাই কিন্তু।
দশ হাজার স্টেপস রুল অনুসরণ করুন
দিনের অনেকটা সময় কিন্তু আমরা এলোমেলো থাকি। সেই সময়গুলোই কিন্তু বই পড়ার কাজে ব্যবহার করা যায়। সকালে অফিসে যাওয়ার সময়, বাসে বসে বসে, চা খাওয়ার সময় কিন্তু নিজেকে সময় দিতে বই পড়তে পারেন। দশ হাজার স্টেপস রুলটা হচ্ছে, সারাদিন আমরা যারা তেমন চলাফেরা করি না, তারা একটু দোকানে যাওয়া, বাড়ির বাইরে যাওয়া, পার্কে একটা চক্বর দিয়ে আসলেই দিনের ১০ হাজার স্টেপস হাটা হয়ে যায়।
একসঙ্গে অনেক বই পড়ুন
অনেকে আবার একসঙ্গে অনেক বই পড়তে পছন্দ করেন না। আমি আবার একই সঙ্গে ২/৩টি ভিন্ন ধারার বই পড়তে পছন্দ করি, সকালে রিচার্ড ফাইনম্যান তো বিকেলে টিম ফেরিস। গল্প-উপন্যাসের ক্ষেত্রে আবার এই ফর্মূলা একটু বিভ্রান্তকরই।
মটর সাইকেলের পেছনে বসে রাইডারের পিঠে বই রেখে পড়ে দেখেছি। মজাই অালাদা। বাথরুমে পড়তে ভাল লাগে। যাদের ব্যাগে একটা বই থাকেনা তারা ভিখারী। জ্বালা যন্ত্রণা যখন বেশি তখন বই একমাত্র হিলার। বই হলো একমাত্র প্রেমিকা যে কখনো বিট্রে করেনা কিন্তু অন্য প্রেমিকা ধরতে সাহায্য করে।
আপনি দারুণ লিখেন স্যার। লেখা শুরু করেন না??