বিয়ের পরে স্টিভ জবস তার সহধর্মী মিসেস জবস ল্যরেন পাওয়েলকে নিয়ে নতুন বাড়িতে ওঠেন। বিশাল স্প্যানিশ নকশার বাড়িতে ছিল না তেমন কোন ফার্নিচার আর কোন আসবাবপত্র। লিভিং রুমের ডেকোরেশন কি হবে তা নিয়ে মিসেস জবসে সঙ্গে অনেক বছর একমত হতে পারেন নাই স্টিভ জবস। ‘What is the purpose of a sofa?’-এই তর্কের বয়স ৮ বছর হলে তারপরে ক্ষ্যান্ত হন মিসেস জবস।
স্টিভ জবসের পারফেকশনের প্রতিটি এতটাই অবসেশন ছিল সেটা তার বাড়ির আসবাবপত্র কেনা ও ব্যবহারের দিকে খেয়াল করলে প্রমাণ পাওয়া যায়। ১৯৯৬ সালে উইয়াডের এক নিবন্ধে লেখা হয়, নতুন দম্পতিরা যখন তার সন্তানের নাম কি হবে সেটা নিয়ে ভাবে, তখন স্টিভ জবস আর ল্যরেন কোন দেশের ওয়াশিং মেশিন কিনবেন তা নিয়ে আলোচনা করতেন। কি খাবার টেবিল, কি ঘুমানোর সময় চলতো কোন ওয়াশিং মেশিনের ডিজাইন কেমন ভালো।
২০১৬ সালের মধ্য ডিসেম্বরে আমি Steve Jobs: The Man Who Thought Different বইটা সংগ্রহ করি। Karen Blumenthal-এর লেখায় অনেক কিছু সংক্ষিপ্ত মনে হয়েছে আমার। তবে Walter Isaacson এর বায়োগ্রাফিকেই স্টিভ জবসের অফিসিয়াল বায়ো ধরা হয়, ছয়শর বেশি পৃষ্টা।
বায়োগ্রাফি যেমন হয় তেমনই এক বই, আর বইটা যেহেতু স্টিভ জবসে নিয়ে তাই অনেক কথা হয়তো অনেকবারই অন্য কোথায় পড়েছি। স্টিভ জবস প্রায় সময়ই ‘ওয়ান ম্যান’ টাইপের আচরণ করতেন, যার কারণে বইটার যত সামনে গিয়েছি ততই পড়ার আগ্রহ বেড়েছে। কখনও সুপার হিরো, কখনও টেক জিনিয়াস, কখনও সম্পূর্ণ একা-এমন একটা মানুষ ছিলেন স্টিভ জবস। স্বার্থ, হিংসা, রাগ-সবই ছিল স্টিভের জীবনে।
স্টিভ জবস ব্যক্তিগত জীবনে ভয়ানক, প্যাথোলজিক্যাল লায়ার, অ্যাগ্রেসিভ ছিল বললেও ভুল হবে না!
প্রয়োজনে বন্ধুর বোনাসের টাকা নিজের নামে তুলেছেন, পরে তা ফাঁস হলে ‘মিথ্যা’ বলে পার পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। কন্যাকে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন, আবার শেষে বাবা-সন্তানের সম্পর্ককে গুরুত্ব দিয়েছেন। মাইক্রোসফটকে আজীবন শত্রু ভাবলেও বিপদে পড়ে টাকা নিয়েছেন, মাথা নিচু করলেও নিজের ‘না’-কে ‘না’ হিসেবে বলে গেছেন স্টিভ জবস।
5 thoughts on “সোফারও কিন্তু একটা উদ্দেশ্য থাকে-স্টিভ জবস”