জ্যাপোসের সিইও টনি সিয়ের ডেলিভারিং হ্যাপিনেস বইটা পড়ে যে আনন্দ পেয়েছিলাম, গাই কাওয়াসাকির দ্য ম্যাকিনটোশ ওয়ে পড়ে সেই রকমই মজা পেয়েছি। গাই কাওয়াসাকির লেখালেখির সঙ্গে প্রথম পরিচয় দ্য আর্ট অব স্টার্ট বইটার কল্যানে। দ্য আর্ট অব স্টার্টও দারুণ বই, সম্ভবত ৫/৬ দিনে পড়ে শেষ করেছিলাম। সেই ১৯৯০ সালে লেখা হলেও বইটা পড়ে আশির দশকের ম্যাকিনটোশ সময়কার মার্কেটিং-ব্র্যান্ডিং দুনিয়ার কথা জানা যায়। আশির দশকের অ্যাপলের মার্কেটিং-ব্র্যান্ডিং ভাবনার অনেক কথা আছে বইটায়। কিভাবে ইভাঞ্জেলিজমকে বেইজ করে মার্কেটে দারুণ সারা ফেলার কথা বইটা থেকে জেনেছি।
কাস্টমারকে কাস্টমার না, ফ্যান হিসেবে ট্রিট করলে দারুণ সাফল্য পাওয়া যায়। নর্ডস্ট্রমের উদাহরণ দিয়ে ম্যাকিনটোশ ওয়ে বইয়ে তা লিখেছেন গাই কাওয়াসাকি।
সাধারন একটা প্রোডাক্টকে কিভাবে অসাধারন বানানো যায়, তার অনেকগুলো বাইবেলীয় নিয়ম ম্যাকিনটোশ ওয়ে বইয়ে দেয়া আছে।
বইটার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অ্যাপল, ম্যাকিনটোশ নিয়ে স্টিভ জবসসহ অ্যাপলের অনেক কর্তার বিরুদ্ধে, খানিকটা আক্রোশ নিয়ে, অনেককিছু লিখেছেন কাওয়াসাকি। কৌতুক করে লেখার কারণে বিষেদাগারগুলো পড়তে খারাপ লাগে নাই।
তিন খন্ডে ভাগ করে বইটি শেষ করেন গাই কাওয়াসাকি। প্রথম দিকে ম্যাকিনটোশের ইতিহাস নিয়ে লেখেন তিনি। এসময় অ্যাপলের উঁচু পদের লোকজনের ‘পলিটিক্স’ ভাবনা আর আচরণগুলো তুলে ধরেন তিনি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাগটার জন্যই বই আসলে জনপ্রিয়। Doing Things Right আর Doing the Right Things এই দুই বিষয়ে লেখেন গাই। গাই ‘ম্যাকিনটোশ ওয়ে’ কোম্পানি নামে আসলে একটি ধারণা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন, যে কোম্পানিগুলো আসলে Doing Things Right আর Doing the Right Things থিমে কাজ করে। ম্যাকিনটোশকে সেই ভাবেই চালাতে চেয়েছিলেন গাই, শেষ পর্যন্ত না পেরে অ্যাপল থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি।
বইটার শেষ চ্যাপ্টারটা দারুণ। ‘সফল বিয়ে করার কিছু উপায়’ শীর্ষক এই চ্যাপ্টারটা ১৯৯০ সালে লেখা হলেও, এখনও প্রাসঙ্গিক। আপনার প্রেমিকা বা স্ত্রীকে ‘আমি কাজ করছি’ এই বাক্য না বলে ‘আমি লিখছি’, কিংবা ‘আমি বই পড়ছি’ বলুন, গাই কাওয়াসাকির ভাষায় এই লাইনগুলো নাকি দারুণ কাজে দেয়।
আরও পড়ুন
দ্য আর্ট অব স্টার্ট: শুরু কিভাবে শুরু হয় তাই আছে বইটায়।
ডেলিভারিং হ্যাপিনেস: কোম্পানি কালচার কি জিনিষ তা নিয়ে দারুণ বই।
জিরো টু ওয়ান: পিটার থেইলের ‘সেই ছয় প্রশ্ন’ বিষয়ক দারুণ বই।
-- Stay cool. Embrace weird.