আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি নিয়ে আমাদের অনেক আক্ষেপ আছে। যদিও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয় হয়েছে এই ফলাফল বিকৃত করার কোন উপায় নেই। যুদ্ধের বিভিন্ন ঘটনা ও প্রেক্ষিত নিয়ে রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে ইতিহাস বিকৃত হয়েছে, হচ্ছে, হবে। একাত্তর নিয়ে আসলে বিকৃত ইতিহাসের বড় একটা কারণ হচ্ছে গবেষণার অভাব। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে যত বই আছে, কিংবা রোয়ান্ডার গণহত্যা নিয়ে, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তেমন গবেষণা-বই ও সিনেমার অভাব স্পষ্ট। একাত্তরকে নিরপেক্ষ ভাবে জানতে কিছু বই রেফারেন্স হিসেবে নিতে পারি আমরা। বইগুলো বেশির ভাগই দেশের বাইরের লেখকদের রচনা ও গবেষণা, যে কারণে কোন কোন ক্ষেত্রে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পেয়েছে।
দ্য কর্নেল হু উড নট রিপেন্ট
দ্য ব্লাড টেলিগ্রাম
বইটিতে গ্যারি যে ব্যাস একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতির দুর্বলতাগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন। ইরানের শাহর মাধ্যমে পাকিস্তানকে অস্ত্র সরবরাহ, নিক্সন-কিসিঞ্জারের ভাবনা বইটিতে প্রকাশ করা হয়েছে। অধিকাংশ আমেরিকান তখন ভিয়েতনাম যুদ্ধ বা কোরিয়ান ওয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিল, তাদের অজানার বাইরে আমেরিকা কিভাবে রাশিয়াবিহীন আরেকটি এলাকায় যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল তাই ছিল বইটিতে। নিক্সন-কিসিঞ্জার ভারতে কৃত্রিম খরা তৈরির চেষ্টা নিয়ে বেশ আগ্রহী ছিলেন সে সময়।
উইটনেস টু সারেন্ডার
পাক-আর্মির ব্রিগেডিয়ার সিদ্দিক সালিক ১৯৭১ সালে ছিলেন ঢাকায়। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানে ফিরে যান তিনি। যুদ্ধকালিন সময় টিক্কাখান, ইয়াকুব আর নিয়াজীদের সঙ্গে সরাসরি কাজ করেছেন তিনি। যুদ্ধকালীন সময় আইএসপিআরে থাকাকালিন সময় তিনি পাক হাইকমান্ডের গতিবিধি সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। যুদ্ধে হেরে যাওয়ার কৌশলগত কারণগুলো সালিক তার বইয়ে তুলে ধরেছেন।
সারেন্ডার অ্যাট ঢাকা
বইটিতে ১৯টি অধ্যায় আছে। জেফ আর জ্যাকব বইটিতে ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে লিখেছেন। সে সময় ভারতের অবস্থান, পাকিস্তানের বিরুদ্ধের যুদ্ধের কারণ সম্পর্কে সমরবিদ হিসেবে ভারতের অবস্থান তুলে ধরেছেন তিনি।