শিরোনামটা কাটতি বাড়ানোর মতই। অনেক কারণে এমবিএ ডিগ্রি-ওয়ালাদের চাকরিতে নিয়োগ দেয়া না অনেক নামী প্রতিষ্ঠান। শুধু বাংলাদেশেই না, আমেরিকা ভারতে এমনটা দেখা যায়। দেশের বাইরে এমবিএ অনেকটাই র্যান্ডম একটা ডিগ্রি। কিন্তু বাংলাদেশে এমবিএ মেজর ইন অ্যাকাউন্টিং বা ফিন্যান্স বা মার্কেটিং ট্যাগে বিক্রি হয়। এমবিএ সব সময়ই জেনারেল বিষয়, যেখানে কোন কোন মেজরে বেশি পড়াশোনা করা হয়, কিন্তু গভীরে যাওয়া হয় না। নাইকির প্রতিষ্ঠাতা ফিল নাইটের বায়োগ্রাফির শুরুর দিকের একটা ঘটনা শেয়ার করা যায়। নাইকিতে এমবিএ কিংবা জেনারেল বিষয়ে সাধারণ বিবিএ করা লোকজনের নিয়োগ দেয়া হয় নাই। অ্যাকাউন্টিংয়ে ব্যাচেলর ডিগ্রি শেষে অ্যাকাউন্টিং পড়াতেন ফিল নাইট। নাইকিতে আইন কিংবা অ্যাকাউন্টিং পড়া কঠিন কঠিন বিষয়ের লোকজনের চাকরি দেয়া হয়। ফিল মনে করেন, যে মানুষটা আইনে পড়ে মার্কেটিংয়ে আসবেন তার পড়ার আগ্রহ অন্যদের চেয়ে কঠিন। বিষয়টা এমন ২২ বছর বয়সে কেউ আন্তর্জাতিক সম্পর্কে অনার্স করেন আর ২২ বছর বয়সে কেউ এমবিবিএস ডিগ্রি শেষ করেন-দুজনের মধ্যে দ্বিতীয় জনের পড়াশোনার ধার ও ভার বেশি কিন্তু। নাইকি বা ফিল নাইট যে অন্যদের অসম্মান করছে বিষয়টা এমন না। সব বিষয়ের পড়াশোনাতে সমান পর্যায়ের আগ্রহ কিংবা ধাক্কা থাকে না। কঠিন পর্বত পার করা ক্রীড়াবিদ আর দাবাড়ুর মধ্যে পার্থক্য যেমন তেমন একটা সূক্ষ পার্থক্য আছে এখানে।
আমাদের দেশেও এমন অনেক কোম্পানি আছে যারা নাইকির মতো র্যান্ডম এমবিএ বা বিবিএ করা লোকজন নিয়োগ দেয় না। আর দুই একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বাকি সব এমবিএ ক্লাস কতটা সিরিয়াস তা একটু কান উঁচু করলেই বোঝা যায়। অন্য ট্র্যাকের অন্য বিষয়ের লোকজনকে এমবিএ পড়ুয়াদের বদলে নিয়োগ দেয়ার আরেকটা সুবিধা হচ্ছে গ্রোথ মাইন্ডসেট। এমবিএওয়ালাদের গ্রোথ মাইন্ডসেট কম থাকে। অন্য দিকে অন্য বিষয়ের লোকজন যেহেতু ব্যবসা দুনিয়ার জিনিষপত্র কম জানে তাই তাদের জানার আগ্রহ বেশি থাকে বলে গ্রোথ সেন্স ভালো হয়।
কেন এমবিএ
মাইক্রোসফেটর সত্য নাদেলা প্রকৌশলী ছিলেন। পরে হয়েছেন সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার। মাইক্রোসফটে কাজ করতে করতে করেছেন এমবিএ। এমবিএ ব্যবসা দুনিয়াতে লিডারশিপ, ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দেয়। আমাদের দেশে যেটা আসলে হয় না। অনার্সের পরেই এমবিএ পড়ে চাকরির চেষ্টায় ঝুঁকেন সবাই। বাইরের দেশে এমবিএ পড়াশোনা কেস ওরিয়েন্টেড। আমাদের এখানে এটা রেয়ার একটা বিষয়। এখন ০ আর ১ স্কেলে হার্ভার্ড, ইয়েল বা শুলেসের এমবিএ আর বাংলাদেশের এখনকার এমবিএকে কোন মার্কিং করছেন তার ওপর নির্ভর করছে আমরা কি দেখছি। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এমবিএ হুজুগটা কমে যাবে, আবারও টেকনিক্যাল বিষয়ের দিকে ঝোঁকার সুযোগ বাড়বে।
সমস্যার সমাধান
এমবিএ ডিগ্রির দাম থাকলেও কোন বিষয়ে কঠিন ও গভীর পড়াশোনা থাকতে হবে। সেটা প্রকৌশল বা সাধারণ বাংলা ভাষাতেও হতে হবে। এমবিএ একটা জার্সি, দামী জার্সি। একটা জার্সি যখন সিআরসেভেন পড়েন তখন যে দাম উপরে ওঠে, আবার তেভেজ যখন কোন ছোট ক্লাবে খেলেন তখন দাম নিচে নামে। তাই সাবধান।
—
ফিচার ছবি: র্যান্ডম গুগল থেকে নেয়া। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় বা কাউকে খাটো করে কিছু বলার জন্য ছবিটি নয়।
-- Stay cool. Embrace weird.