আমি ২০০৮ সালের গণিত উৎসবে ভলান্টিয়ার-মুভার্স হিসেবে স্বেচ্ছাসেবি হিসেবে অংশ নিয়েছিলাম। সেই শুরু, এবারে ২০১৭। যাত্রা চলছেই, চলবে।
২০০৮ সালে তখন নবী ভাই, সুব্রতদা, জুয়েল ভাই, হাছিব ভাইরাই ছিল সব। আর সবার উপরে তো (৬তালায় থাকতো) মুনির হাসান। ঢাকার আঞ্চলিক উৎসব আর জাতীয় উৎসবেই ছিল মুভার্স হিসেবে দৌড়াদুড়ি। আহ, কি সেই দিন। পরীক্ষার হলে গার্ড দেয়া আর স্টেজের পাশেই দাড়ানো ছিল কঠিন দায়িত্ব। এভাবেই ২০০৯ চলে যায়।
এরপরে আসে ২০১০, সেবার প্রথম সুব্রতাদার সঙ্গে যাই গোপালগঞ্জে প্রাক-প্রস্তুতির অংশ হিসেবে। সেবারই প্রথম গোপালগঞ্জে গণিত উৎসব হয়, আমারও ঢাকার বাইরে গণিতের কাজে যাওয়ার প্রথম সুযোগ। রঙিন এখনো, মাওয়া ঘাট পাড় হওয়া তো এই তো সেদিনের রাতের কথা মনে হয়। ‘সুব্রতদা আশার সঙ্গে কোথায় যাচ্ছে?’-এ নিয়ে তার তৎকালিন বান্ধবী-বর্তমান জীবনসঙ্গীনি রুপন্তিদিরও তো রাগারাগি গণিতের মুভার্সদের কাছে এখনও বেশ চেনা।

২০১১-২০১২-২০১৩-২০১৪-২০১৫-২০১৬, রঙ ছিটানো-ছড়ানো বছর আমার। বরিশাল, পটুয়াখালি, সিলেট, জামালপুর, ফেনী, চট্টগ্রাম, বরগুনা, রাজশাহী, মৌলভীবাজার, ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা-৩০টা তো জেলায় গণিত উৎসবের কাজে তো গেছিই। খুব আগে মুভার্স হিসেবেই দৌড়াদুড়ি করতাম, গেল কয়েক বছর উৎসবের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কয়েক জায়গায় তো মঞ্চে অনুষ্ঠান সমন্বয়কের কাজও করতে হয়েছে। জীবন রঙিন এখানেই আমার, প্রতি বছর নানান অভিজ্ঞতার রেশ পাই।
২০১০ সাল থেকে নানা উৎসবের অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রথম আলোর গণিত ইশকুল পাতায় লেখার অভিজ্ঞতাও দারুণ। নতুন অভিজ্ঞতা, নতুন রঙ-রাঙানো সময়, নয় বছরই তো।
জুয়েল ভাই লোকটাকে কি যে জ্বালাইতেছি, চলছেই।
নয় বছর, এর মধ্যে এমন কয়েকজন শিক্ষার্থীকে চিনেছি যারা আগে প্রাইমারি ক্যাটাগরিতে পরীক্ষা দিত, এখন একাডেমিক দলের সদস্য! আর আইএমও টিমের সদস্যরা তো আছেই।
“গণিত উৎসব আমাকে কি দিয়েছে?”-এই প্রশ্নের উত্তরে আমি চুপ-চাপ থাকি; সবাই ভাবে তেমন কিছুই দেয় নাই। আমি আসলে চুপচাপ ভাবি, সংখ্যায় কি দিয়েছে তাহা বলা মুশকিল।
যে নয় নিয়ে গণিত উৎসবে আমার এবার ৯ বছরের চলাচল
১. গণিত অলিম্পিয়াডের কারণেই আমি প্রথম ভারত ও শ্রীলংকা যাওয়ার সুযোগ পাই।
২. যে কোন নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার সময় গণিত উৎসবের কথা থাকবেই আমার।
৩. ডিসেম্বর-জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি, আমার দুনিয়া একদিকে-গণিত উৎসব আরেক দিকে।
৪. নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে এক গণিত উৎসবের কারণে পরিচয় হয় তা কি টাইপ করে লেখা যায়?
৫. হাজার হাজার জায়গায় ভলান্টিয়ারিং না করে, একটা জায়গাতে যুক্ত হয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।
৬. গণিত উৎসবের কারণে গণিত ইশকুলে লেখার সুযোগ, প্রথম আলোয় নাম-অসাধারন অভিজ্ঞতায় বলা যায়।
৭. জুয়েল ভাই, রকি ভাই, সুব্রত দা, সুমন দা-হাতে তুলে নিয়ে গেছে আমারে।
৮. অর্ধেক দেশ ঘুরেছি এই উৎসবের নামে।
৯. মুনির হাসানকে অনুসরণ, দারুণ অভিজ্ঞতা।
-- Stay cool. Embrace weird.