আমিও প্রোগ্রামিংয়ের উপর বই লিখতে পারবো। আর্দশ প্রকাশনীর বই গল্পে স্বল্পে প্রোগ্রামিং পড়ার পরে এমন ভাবনা আসবে মনে! বইটা সরাসরি প্রোগ্রামিংয়ের উপর, আবার প্রোগ্রামিংর উপর না। আমার মত যারা বহুমুখি প্রতিভার অধিকারী তারা বইটার ৬৭ পৃষ্ঠা থেকে ১০০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত স্কিপ করে যেতে পারেন। স্কিপ করার বুদ্ধি দিলেও বইটার আসল টার্গেট গ্রুপ যারা তাদের জন্য ৬৭-১০০ পৃষ্ঠা প্রোগ্রামিং শেখার জন্য। সুবিন ভাই, ঝংকার মাহবুব ভাইয়ের পরে প্রোগ্রামিং নিয়ে কারও বই পড়লাম, মোটামুটি ২ দিনে শেষ করার মতই বই।
বইটায় যা নাই!
নামে কিই আসে যায়? বইটার নামে গল্প শব্দটাও থাকলেও পুরো বইয়ে ৩টার বেশি গল্পই নাই! লেখক প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন এখানে নিশ্চিত বলা যায়।
আবার নামে স্বল্প শব্দটা আছে দেখেও বিষম খেতে হবে। পুরো বইটা হঠাৎ করে এক জায়গায় শেষ করে দেয়া হয়েছে, তখন মনে হবে বইটা স্বল্প কেন?
বইটি আদর্শের স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। লেখককেও সেখানে পাবেন। প্রথম বই দেখে আগের দুই বাচ্চাকে বাসায় রেখে সারাদিনই বইমেলাতে তৃতীয় বাচ্চাটার জন্য প্রতীক্ষা তার।
ইদানিং সেই লেখকদের বই পড়ি যাদের কেন জানি চিনি। মুনির ভাই, রাগীব ভাই, চমক ভাই-সবার বই পড়ার সময় একটা সমস্যা অনুভব করি। উনাদের যেহেতু সামনে থেকে কথা বলতে দেখি, তাই বই পড়ার সময়ও মনে হয় কানের পাশেই কথা বলছেন। মইনুল রাজু ভাই, বইয়ের ভেতরে দেখলাম যার নামে একটা “ডক্টর” প্রিফিক্সও আছে! সেই রাজু ভাই এমনিতে লেখক না, প্রথম বই হিসেবে আমার সঙ্গে কথা বলছেন এমন একটা টোন পেয়েছি আমি। আমার সমান বয়সী পাঠকরা উনাকে তেমন চিনবেন না বলেই বেশি ঝামেলায় পড়ে যাবেন। তবে বইটি যেহেতু ১২ থেকে ১৮ বছরের কিশোরদের জন্য তাদের জন্য এবারের বইমেলার সেরা ৪০০ বইয়ের তালিকার একটা হতে পারে গল্পে স্বল্পে প্রোগ্রামিং বইটি।
লেখক হিসেবে আরও কষ্ট করতে হবে মইনুল রাজুকে।
বইটা আসলে যিনি লিখেছেন, তিনিই আবার ভূমিকা লিখেছেন কিনা আমি নিশ্চিত নয়, নামের আংশিক মিল আছে দুজনেরই।
যারা ডগলাস অ্যাডামসের হিচহাইকার্স গাইড টু গ্যালাক্সি সায়েন্স ফিকশন সিরিজ বইয়ে পড়েছেন তারা টের পান সিরিজটি বিবিসি রেডিওতে কেন জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। গল্পটা লেখার মত করে বলা আর সেই গল্প লেখাকে কথার মত করে বলা বেশ কঠিন কাজ। লেখক মইনুল রাজু সেই চেষ্টাকে উৎরাতে পেরেছেন বলে আমার বিশ্বাস।
একটা আপত্তি।
বইটির শুরুতে স্টিভ জবসকে প্রোগ্রামিং ও তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট একটা তালিকায় রাখা হয়েছে। আমি একটু দ্বিধান্বিত। স্টিভ জবস কে তা জানতে হলে আমার আগের লেখাগুলো পড়তে হবে।
—
গুগলে কেউ গল্পে স্বল্পে প্রোগ্রামিং লিখে সার্চ করে বিপদে পড়তে পারেন। প্রথমেই আসবে “মেয়েদের সাথে প্রেম করার ২০ টি কৌশল!”