ফজলে হাসান আবেদ, এক নামেই তার বিশালত্ব বোঝা যায়। আশি ও নব্বই দশকের একদিকের অস্থির বাংলাদেশ, আর অন্যদিকে ব্র্যাক-গ্রামীণ ব্যাংকসহ বিভিন্ন এনজিওগুলোর নানামুখি কাজ আর্থ-সামাজিকভাবে বাংলাদেশকে একটু একটু করে সামনে এগিয়ে নেয়। কখনও কখনও ব্যক্তি তার প্রতিষ্ঠানের চেয়ে বড় হয়, ফজলে হাসান আবেদ তেমনি একটি নাম। শুরুটা ব্র্যাক দিয়ে হলেও শেষের দিকে আড়ং, ব্র্যাক ব্যাংক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়সহ বড় বড় নাম তৈরি করেছেন তিনি। ক্যাপিটালিজম-কেন্দ্রিক দুনিয়াতে এর হয়তো বিকল্প নেই বলেই এসব বড় বড় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তিনি সামাজিক বিপ্লব এনেছেন। তার কর্মজীবনকে ভাগ করলে অনেক কিছু শেখা যায় জানা যায়। বিভিন্ন ইন্টারভিউ থেকে তার কাছে থেকে আমি ব্যক্তি হিসেবে যা যা শিখতে পারি তাই নিয়েই এই পোস্ট।
ক্ষুদ্রতা সুন্দর, কিন্তু বৃহতে মঙ্গল
ফজলে হাসান আবেদের সব কিছুই শুরু ক্ষুদ্র কিছু থেকে। পাইলট প্রকল্প থেকেই যেমন ব্র্যাকের শুরু, তেমনি আড়ংয়ের শুরুটা কলাবাগানের ছোট্ট একটা ভাড়া বাড়ি থেকে। ছোট দিয়ে শুরু করলেও বৃহতে তিনি মঙ্গল খুঁজেছেন। ব্র্যাক বাংলাদেশ থেকে শুরু করে ১০-১২টা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। থেমে নেই তার ক্ষুদ্র যাত্রা।
ছেড়ে দেয়া
ফজলে হাসান আবেদ স্যার কোন কিছু শুরু করে একটি স্থির পর্যায় পর্যন্ত নিয়ে পরের প্রজন্মের হাতে সব ছেড়ে দিয়েছেন। যে কারণে কোন প্রতিষ্ঠানেই তার উপস্থিতি নেই, কিন্তু ব্যক্তি হিসেবে স্বতন্ত্র প্রভাব খেয়াল করা যায়।
যুক্ত করা
ফজলে হাসান আবেদ স্যার যত কিছুই করেছেন সব দল-কেন্দ্রিক ছিল। কোন কিছু একা করেছেন বলে জানা যায় না। তার বিশাল কর্মী-বাহিনী ছিল তার শক্তি, তার ভরসা।
বিন্দুতে স্থির থাকা
যতই দুনিয়ার কাজ করুন না কেন, কেন জানি বিন্দু-মুখি ছিলেন তিনি। বারবার কেন্দ্রে ফিরে আসার একটা প্রবণতা ছিল তার। বিন্দুতে স্থির যে কোনও কাজই বড় হয়, ব্যাপক হয়। এটা যেন ছড়িয়ে পড়ো, আবার ফিরে আসো।
জানতে হবে, পড়তে হবে
ফজলে হাসান আবেদ স্যার অনেক বই পড়তেন। বিভিন্ন ইন্টারভিউ থেকে জানা যায় তিনি ইতিহাস-বিজ্ঞান-রাজনীতি সবই পড়তেন, জানতেন-উপলব্ধি করতেন।
নিজেকে ভাঙতে হবে
ফজলে হাসান আবেদ স্যার এনজিও দিয়ে বড় হলেও নিজেকে ভাঙতে তিনি সবই করেছেন। যে পারিবারিক আবহে বেড়ে ওঠা তার সে মুখি তিনি কমই ছিলেন। লন্ডনে পড়তে গেলেন নৌবিদ্যায়, ফিরলেন সিএ করে। বারবার নিজেকে ভেঙ্গেছেন। যে কারণেই হয়তো ৩৬ বছর বয়সেই সব শুরু তার। আবার ৩৬-ই আমরা বুড়িয়ে যাই।