আমি ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের দুটি পদের জন্য দুই সময়ে চাকরির ভাইবা ও পরীক্ষার মুখোমুখি হই। অনলাইনে অনেক চাকরির অভিজ্ঞতা সম্পর্কে লেখা থাকলেও মার্কিন দূতাবাসের চাকরি নিয়ে তেমন লেখা পাওয়া যায় না। সেই জায়গা থেকেই লিখছি এই অভিজ্ঞতা।
যেভাবে চাকরির খোঁজ পাই
আমি ফেসবুক ও লিংকডইন থেকে বিভিন্ন গ্রুপ থেকে চাকরির খোঁজ পাই। এছাড়াও বিডিজবসসহ বিভিন্ন পোর্টালে, এমনকি প্রথম আলো-ডেইলি স্টারসহ বড় বড় গণমাধ্যমে মার্কিন দূতাবাসসহ বিভিন্ন দূতাবাসের চাকরির বিজ্ঞাপনের খোঁজ পাওয়া যায়। বিভিন্ন দূতাবাসের ওয়েবসাইটের জব অপশন ও নোটিশেও আপনি বিভিন্ন চাকরির খোঁজ পাবেন।
যেভাবে আবেদন করতে হবে
অনলাইনে নির্ধারিত জব পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। এরবাইরে অন্য কোন লিংক নেই। অনেক সময় অনেক থার্ডপার্টি প্রতিষ্ঠান মনোযোগ আকর্ষণের জন্য ফেইক লিংক জেনারেট করে। গুগল ফর্মে অনেকে তথ্য নিয়ে চাকরির প্রলোভন দেখাতে পারে। দূতাবাস নির্ধারিত ওয়েবসাইট ব্যতীত অন্য কোথাও আবেদন করবেন না।
অনলাইন আবেদনে যা থাকে
অনলাইনে সাধারণ তথ্য যুক্ত করে একটি ফরম পূরণ করতে হয়। এখানে সকল সঠিক তথ্য যুক্ত করতে হবে। এছাড়াও ৩-৪টি প্রশ্ন থাকে মিশন-ভিশন ও ক্যারিয়ার বিষয়ক। এধরণের প্রশ্নের উত্তরে চেষ্টা করবেন চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে যে ধরণের শব্দ ব্যবহার করা হয়, তা লিখতে। চাকরির বিজ্ঞাপনের ভাষা খুব জরুরীভাবে আয়ত্ব করে আবেদনের লেখাগুলোকে সেভাবে সংযুক্ত করবেন।
আবেদনের পরে যা হয়
- অনলাইনে আবেদনের পরে সাধারণ ইংরেজি দক্ষতার জন্য ডাকা হয়। আমেরিকান দূতাবাসের পরীক্ষায় সাধারণ ইংরেজি দক্ষতা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে টেস্ট নেয়া হয়। এখানে Verb, Tense, Fill in the Blanksসহ সাধারণ ইংরেজি ভাষা দক্ষতা পরীক্ষা করা হয়। যেকোনো বেসিক গ্রামার বই একবার পড়লেই এসব রিভাইস করা যাবে। এছাড়াও কম্প্রিহেনশন পড়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। আমি প্রেস ও কমিউনিকেশন পদে আবেদন করেছিলাম বলে অনুবাদ করতে হয়েছিল। সাধারণ অনুবাদ আসে। বৈশ্বিক রাজনীতি, জলবায়ু পরিবর্তন, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক অনুবাদ ও সামারি টেস্টে দেয়া হয়। সময় থাকে ২০-৩০ মিনিটের মতো।
- ল্যাংগুয়েজ টেস্টে টেকার পরে স্কিল টেস্টের জন্য ডাকা হবে। স্কিল টেস্টে অনুবাদ, সামারি লেখার মত ৩-৪টি প্রশ্ন থাকে। ২০-৩০ মিনিটের মধ্যে লিখতে হবে আপনাকে।
- স্কিল টেস্টে টিকলে আপনাকে ভাইবার জন্য ডাকা হবে। খুব সাধারণ ভাইবা অনুষ্ঠিত হয়। আপনি কোন বিষয়ে কাজ করছেন। চাকরির অভিজ্ঞতা, চাকরি জীবনে কোন চ্যালেঞ্জ থাকলে তা কিভাবে জয় করেছেন, কিভাবে প্রতিষ্ঠানের সাফল্য ও লক্ষ্য অর্জনে কাজ করবেন এধরনের প্রশ্ন করা হয়।
- ভাইবাতে উর্ত্তীর্ণ হওয়া পরে সিকিউরিটি ভ্যারিফিকেশন করার মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ করা হয়।
- চাকরির আবেদনের পরে নানান পরীক্ষার পুরোটা সময় ইমেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়। করপোরেট ভাইবা বা পরীক্ষার মত খুব প্রেশার দেখা যায় না বিভিন্ন নিয়োগের ক্ষেত্রে। দূতাবাসের মানবসম্পদ বিভাগে কোন প্রশ্ন থাকলে সরাসরি ইমেইল করে জানার সুযোগ আছে।
যা যা খেয়াল রাখতে বলবো:
- অনেকেই অনেক সময় বাড়তি তথ্য নানানভাবে লিখেন, এসব পরিহার করতে হবে।
- ইংরেজি ভাষায় কমিউনিকেশনের সাধারণ দক্ষতাগুলো প্রকাশে খেয়াল রাখতে হবে।
- সাধারণ কম্পিউটার দক্ষতা জানতে হবে।