সুগত বসু একজন ভারতীয় ইতিহাসবিদ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। উইকিপিডিয়ার তথ্য বলছে, তিনি আশির দশকের মাঝামাঝি সময় থেকেই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। ইতিহাসে তার বিষয় হল দক্ষিণ এশিয়া ও ভারত মহাসাগরের ইতিহাস। ২০০১ সাল পর্যন্ত সুগত বসু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টাফস ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেছেন। তারপর তিনি শিক্ষক হিসাবে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। ২০১৪ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত সুগত বসু যাদবপুর লোকসভার সাংসদ ছিলেন।
২০২৪ সালের মার্চে তিনি ঢাকা এসেছিলেন। তার একটি বক্তব্য শোনার সুযোগ হয় ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের কিংবদন্তি নেতা সুভাষ চন্দ্র বসুর ভ্রাতুষ্পুত্র শিশির কুমার বসু ও তার স্ত্রী কৃষ্ণা বসু মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে যে অবদান রেখেছেন তার বিস্তারিত শোনার সুযোগ হয়।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে কলকাতার নেতাজি ভবনের নানা উদ্যোগের কথা। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও তৎকালীন ভারতে অন্যতম সেরা চিকিৎসকদের একজন শিশির কুমার বসু এপ্রিলের শুরুতেই তার কাজ শুরু করেন। এপ্রিল মাসে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠনের পর মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা কলকাতার নেতাজি ভবনে নিয়মিত যাতায়াত শুরু করতেন। তখন মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে সাহায্য করার লক্ষ্যে এপ্রিল মাসে নেতাজি ভবনের নিচতলায় বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু হলো। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ২৫ শয্যাবিশিষ্ট অস্থায়ী হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয় নেতাজি ভবনের সামনে। পরে শিশির কুমার বসুর পরামর্শে সত্যেন বসু রায়ের নেতৃত্বে বনগাঁ সীমান্তে বকচরা নামক স্থানে ফিল্ড হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়। সেই হাসপাতালে অর্থোপেডিক্স বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন ডা. অশোক সেনগুপ্ত। শিশির বসু ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপন করে থেমে থাকেননি। পাকিস্তানি হানাদারদের ভীতিজাগানিয়া সীমান্ত চৌকি পেরিয়ে যশোর, খুলনার নানা হাসপাতালে নিয়মিত ওষুধ সরবরাহ করতেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বিনাপাসপোর্টে ভারত-পাকিস্তানের সীমানা অতিক্রম করে পূর্ব বাংলায় গাড়ি নিয়ে ভেতরে আসার অভিজ্ঞতার কথা বলেন। ১৯৭২ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী কলকাতার রাজভবনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। সুভাষ চন্দ্র বসু তার জেল জীবনে গানের খাতায় ১৭টি প্রিয় গান স্বহস্তে লিখে রেখেছিলেন। তাতে ছিল বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা’। সিল্ক স্ক্রলে লাল অক্ষরে সেই গানগুলোর প্রতিরূপ করে শিশির বসু ও কৃষ্ণা বসু তা তুলে দেন বঙ্গবন্ধুর হাতে।
নিজের প্রথম বাংলাদেশ সফরের বর্ণনা দিতে গিয়ে সুগত বসু বলেন, ‘একাত্তরের নভেম্বরের শেষ রবিবার, বাবার সঙ্গে নেতাজী ফিল্ড হাসপাতালে গিয়েছি। দিনের শেষে বাবা বললেন, সীমান্তের অবস্থা একটু দেখে আসা যাক। আমাদের জিপ যশোর রোড ধরে ছুটে চলল। একটি কালভার্টের কাছে গতি কমাতেই কয়েকজন বন্ধুত্বপূর্ণ সেনা বললেন, আমরা নো ম্যানস ল্যান্ডস পেরিয়ে অনেক দূর চলে এসেছি। সামনে বিপদ হতে পারে, এবার ফিরে যাওয়াই শ্রেয়। পাসপোর্ট এবং ভিসা ছাড়া সেটাই আমার বাংলাদেশে প্রথম প্রবেশ।’
ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের বিষয়ে বলতে গিয়ে সুগত বসু বলেন, ‘আমার মা ছিলেন লক্ষ্মীবাজারের সন্তান। স্বাধীনতার পরে মা লক্ষ্মীবাজারের কথা জিজ্ঞেস করায় বন্ধুরা বলেছিলেন লক্ষ্মীবাজার আছে, আমরা অলক্ষ্মী নিয়ে থাকব নাকি!’
কেবল মুক্তিযুদ্ধই নয়, সুগত বসুর দেয়া বক্তব্যে একই সঙ্গে উঠে আসে ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্য সুভাষ চন্দ্র বসুর নানান তৎপরতা প্রচেষ্টা, চিত্তরঞ্জন দাশের বেঙ্গল প্যাক্ট প্রসঙ্গ, শরৎচন্দ্র বসুর অখন্ড বাংলার প্রচেষ্টা, দেশভাগ, বঙ্গবন্ধুকে কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা থেকে সত্তরের দশকে কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে তার সাক্ষাৎসহ নানা বিষয়।
অনুষ্ঠানে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের লেখা ‘ধনধান্য পুষ্পভরা আমাদের এই বসুন্ধরা’ গান গেয়ে বক্তব্য শেষ করেন সুগত বসু।
-- Stay cool. Embrace weird.comments
রোকেয়া এ. রহমান মাইডাস ফাইন্যান্সিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা। নানান পরিচয়ের বড়…
আমি স্টিভ জবস, এলন মাস্ক আর বিল গেটস-ওয়ারেন বাফেটদের ম্যানেজমেন্ট স্টাইল আর বিভিন্ন ক্রিয়েটিভ অ্যাপ্রোচ…
আত্মবিশ্বাস, ছোট্ট একটি শব্দ। শব্দটি ছোট হলেও খুব কম মানুষের মধ্যে শব্দটির প্রভাব খেয়াল…
In the wake of the reality of the post-corona epidemic, the global community is witnessing…
In the face of unprecedented climate challenges, Bangladesh stands at a crossroads. The recent round…
অদ্ভুতভাবে জুলাই মাসেই শেষ করেছি বইটি, বইটির লেখকের জন্মও জুলাই মাসে। কার্যত বায়োগ্রাফির সব সময়েই…