আত্মবিশ্বাস, ছোট্ট একটি শব্দ। শব্দটি ছোট হলেও খুব কম মানুষের মধ্যে শব্দটির প্রভাব খেয়াল করা যায়। ছোট এই শব্দটির জোর কতটা সেটাও অনেকে আমরা জানি না। আত্মবিশ্বাসী হতে চাইলে শুরুটা নিজেকেই করতে হয়। মনোবিদ কাজী রুমানা হক জানান, “নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে নিজেকেই সামনে টেনে নিয়ে যেতে হবে। কারো জন্য অপেক্ষা কিংবা সুযোগের প্রতীক্ষায় বসে থাকলে শুধু সময়ই নষ্ট হবে। আত্মবিশ্বাসের শুরুটা নিজের মন থেকেই শুরু করতে হবে আপনাকে।”
নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে প্রশ্ন উত্তরের সামাজিক ওয়েবসাইট কোরাতে দশটি উপায় সম্পর্ক জানানো হয়েছে। চলুন ১০টি উপায় জেনে নেই!
১. এই মুহুর্তে বাঁচার অভ্যাস করুন: আমরা অতীতটা ভালো ছিল না বলে আক্ষেপ করি, আবার ভবিষ্যৎ কেমন হবে তার শঙ্কায় থাকি। জীবনটা যে আসলে এই মুহুর্ত সেটা আমরা ভুলে যাই। এই মুহুর্তকে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে দেখুন, তাহলে দারুণ একটি অতীত হবে আপনার। আর তখন ভবিষ্যৎটা হবেও রঙিন।
২. টেলিভিশন দেখায় নিয়ন্ত্রণ আনুন: টেলিভিশন অনুষ্ঠান দেখার জন্য ঘড়ির কাঁটা দেখে অপেক্ষা করবেন না। যে অনুষ্ঠান আপনার সৃজনশীলতা কিংবা কাজে অনুপ্রেরণা যোগায় তাই দেখার চেষ্টা করুন।
৩. হাঁটুন: অফিস কিংবা বাড়িতে যদি কোন সমস্যায় পড়েন যেখানে মন দিয়ে সমাধান জরুরী তখন মিনিট দশেক বাড়ি বা অফিসের আশেপাশে হেঁটে আসতে পারেন। হ্যারিপটার লেখক জে কে রাওলিং সমস্যা পড়লে হাঁটার চেষ্টা করেন, সে সময়টায় তিনি গাছের সঙ্গে মনে মনে কথা বলেন!
৪. বুদ্ধিমান লোকেদের সঙ্গে আড্ডা দিন: বলা হয়ে থাকে, আপনার বুদ্ধিমত্তা আর সৃজনশীলতার গড় আপনি যাদের সঙ্গে চলাফেরা করেন, আড্ডা দেন তাদের বুদ্ধিমত্তার গড় হচ্ছেন আপনি।
৫. সামনে যা পাবেন তাই পড়বেন না!: সামনে যে ম্যাগাজিন পান কিংবা ফেসবুকের দেয়ালে যা জমা হয় তাই পড়েন আপনি? এমন অভ্যাস পরিহার করুন। যে সমস্যায় পড়েছেন কিংবা যা আপনার কাজে লাগবে তাই পড়ুন! পর্যটন সেবা এয়ারবিএনবির প্রতিষ্ঠাতা ব্র্যায়ান চেস্কি প্রতিদিন যে সমস্যায় পড়েন তার উপরেই নিবন্ধ কিংবা লেখা পড়ার চেষ্টা করেন। পড়ার দুনিয়ার কোন সীমানা নেই, যা প্রয়োজন সেটুকুই আগে পড়ুন, এবং নিয়মিত।
৬. যা জানেন তাই চর্চা করুন: ধরুন আপনি ভালো লিখতে পারেন, দিনের কোন একটি সময় তা একটানা আধঘণ্টা লেখার চেষ্টা করুন। ছবি আকার অভ্যাস কিংবা বাগান করার অভ্যাস থাকলে ত্রিশ মিনিট একাগ্রচিত্তে সেখানে সময় দিন। লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর প্রতিদিন সাইকেল অভ্যাস আছে। শুটিং থাকুক না থাকুক কিংবা অবকাশকালীন সময়ে ক্যাপ্রিও সাইকেল চালাবেনই।
৭. অন্য দিকে কিছুটা শক্তি ব্যয় করুন: অফিস আর বাড়ি, এই দুই গন্তব্যে যাদের সারা দিন কাটে তারা দিনের এক টুকরো সময় অন্য কোথাও ব্যয় করার চেষ্টা করতে পারেন। অফিসের শেষে এমন কোন কাজ করতে পারেন যা শুধু আপনার মনন বিকাশেই সহযোগিতা করবে না কিছুটা আর্থিকভাবেও আপনাকে শক্তি যোগাতে পারে তার দিকে খেয়াল রাখুন। টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব অপরাহ উইনফ্রে দিনের শেষ দিকের সময়টা অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে সময় কাটাতে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।
৮. ঘুমান: সারাদিন যতটা কঠিন সময় কাটুক না কেন আপনার প্রতি রাতে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর অভ্যাস করুন। রাতে বেশি না জেগে সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করলে জীবনে যত সমস্যা আসুক না কেন আপনি আত্মবিশ্বাসীই থাকবেন। টেনিস তারকা রজার ফেদেরার প্রতিদিন সূর্য ওঠার ১ ঘণ্টা আগে ঘুম থেকে ওঠে নিজের দিনটা শুরু করেন।
৯. নতুন কিছু শিখুন: প্রতি মাসে নতুন করে কিছু শিখে নিজেকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলুন। শুরুটা করতে পারেন কোন একটি ভাষা শেখার মাধ্যমে। একটি ভাষা আয়ত্ব করতে ৪ থেকে ৬ মাস লেগে যায়। বেহালা কিংবা গীটার বাজানোও শিখতে পারেন। হলিউড অভিনয়শিল্পী অ্যাশ্টন কুচার প্রতিদিনই কিছু না কিছু শেখার চেষ্টা করেন। ঘোড়ায় চড়া থেকে শুরু করে কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে হাতেখড়ি হয়েছে তার আগ্রহ থেকেই।
১০. প্রয়োজন আর গুরুত্বপূর্ণ কি তা বুঝুন: আমরা জীবনের জন্য কোনটা প্রয়োজন আর কোনটি গুরুত্বপূর্ণ তা ভাবতে চাই না। প্রতিদিন সকালে অফিসে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু ব্যায়াম আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজন। তাই পায়ে হেটে অফিসে গেলে আপনার প্রয়োজন মিটবে আর গুরুত্বপূর্ণ কাজটাও করতে পারছেন!
কোরা অবলম্বনে।
-- Stay cool. Embrace weird.